আমার অবস্থানের পরিবর্তন হয়নি: ইসি মাহবুব
নির্বাচন অংশীদারমূলক হয়েছে-এমন বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মাহবুব তালুকদার বলেছেন, ‘আমার অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি।’
আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক লিখিত বক্তব্যে ইসি মাহবুব তালুকদার এ কথা বলেন।
মাহবুব তালুকদার বলেন, গত ৩ জানুয়ারি নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত ‘ধন্যবাদ জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে’ তিনি যে বক্তব্য দেন, তাতে কিছু বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়েছে।
লিখিত বক্তব্যে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেন, আমি বলেছি, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন উপহার দিয়েছি। ইতিপূর্বে ১৭ ডিসেম্বর আমি বলেছিলাম, ‘সব দল অংশগ্রহণ করলে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলা হয়। সুষ্ঠু নির্বাচনের সঙ্গে এর সম্পর্ক নেই। নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হওয়া একটি প্রাথমিক প্রাপ্তি। আসল কথা হচ্ছে, নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হচ্ছে কি না এবং বিশ্বাসযোগ্য কি না? নির্বাচন গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য না হলে অংশগ্রহণমূলক হলেও কোনো লাভ নেই।’
মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে ধন্যবাদ জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে আমি কোনো কথা বলিনি। কেমন নির্বাচন হয়েছে, সাংবাদিকদের এহেন প্রশ্নের জবাবে আমি পূর্বেও বলেছি, নিজেদের বিবেককে জিজ্ঞাসা করুন, তাহলে এ প্রশ্নের জবাব পেয়ে যাবেন। এখনো আমি সেই কথা বলি। আমার অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। আমার ধন্যবাদ জ্ঞাপন বক্তব্যকে রাজনৈতিকভাবে বিচার-বিশ্লেষণ করা ঠিক হবে না।’
এর আগে গত ৩ জানুয়ারি মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘এই প্রথম একটা অংশীদারি ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আমরা জাতিকে উপহার দিতে পেরেছি। আমি মনে করি, এই নির্বাচন বাংলাদেশের নির্বাচনের ইতিহাসে একটা ঐতিহ্য সৃষ্টি করবে।’ তিনি বলেন, ‘নির্বাচন যে এত বিশাল কর্মযজ্ঞ, এ বিষয়ে সত্যি আমার ধারণা ছিল না। কারণ নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কাজ করার কোনো সুযোগ কিংবা নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কাজ করার কোনো সুযোগ আমার আমলা জীবনে কখনো হয়নি। আমি বিশেষ করে লক্ষ করেছি, এই বিশাল কর্মযজ্ঞের যিনি কেন্দ্রবিন্দু, আমাদের নির্বাচন কমিশনের সচিব মহোদয় এবং তাঁর সঙ্গে এখানে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা কী নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই নির্বাচনকে সফল করেছেন। সে জন্য আমি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই মাননীয় প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। যোদ্ধার মতোই তিনি এই বিশাল কর্মযজ্ঞে সবাইকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।’
উল্টো সুর মাহবুব তালুকদারের, নির্বাচন অংশীদারিমূলক হয়েছে
মাহবুব তালুকদার। ছবি: আশরাফুল আলমনির্বাচন কমিশনের (ইসি) সিদ্ধান্তের সঙ্গে বারবার ভিন্নমত পোষণ করে সরকারবিরোধীদের কাছ থেকে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। প্রশংসিত সেই মানুষটি নির্বাচনের ভোট গ্রহণ শেষ হওয়ার তৃতীয় দিনের মাথায় এসে উল্টো সুরে কথা বলতে শুরু করলেন। আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনের পিঠা উৎসবে অংশ নিয়ে মাহবুব তালুকদার বলেছেন, ‘নির্বাচন অংশীদারিমূলক হয়েছে।’
৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনের পর আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনে পিঠা উৎসবের আয়োজন করা হয়।
পিঠা উৎসবে মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘মনোরম পরিবেশে আপনাদের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। আমি খুব ভাগ্যবান, নিজে নিজেই বললাম। তার কারণ হলো, আমি আমার জীবনের প্রারম্ভে যখন সরকারের চাকরিতে আসি, তখন বঙ্গভবনে পাঁচ বছর সময় কাটিয়েছিলাম। চারজন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আমার সরাসরি কাজ করার সুযোগ হয়েছে। সেটা ১৯৭২ থেকে ১৯৭৬ সাল পর্যন্ত। আর জীবনের শেষ পর্যায়ের এসে মাননীয় প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ চারজন নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে আমার কাজ করার সুযোগ হয়েছে। সে জন্য আমি মনে করি, জীবনের প্রথম আমলা হিসেবে কাজ করা এবং জীবনের শেষ প্রান্তে এসে পাঁচ বছর, এগুলো আমার জীবনে গৌরবগাথা হয়ে থাকবে।’মাহবুব তালুকদার আরও বলেন, ‘আপনারা জানেন, আমাদের নির্বাচনের কোনো ধারাবাহিকতা নেই কিংবা ছিল না। আমরা কখনো তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে, কখনো সেনা-সমর্থিত সরকারের অধীনে নির্বাচন করেছি। কখনো নির্বাচন করেছি দলীয় সরকারের অধীনে। কিন্তু তা অংশীদারিমূলক হয়নি। এই প্রথম একটা অংশীদারি ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আমরা জাতিকে উপহার দিতে পেরেছি। আমি মনে করি, এই নির্বাচন বাংলাদেশের নির্বাচনের ইতিহাসে একটা ঐতিহ্য সৃষ্টি করবে।’
মাহবুব তালুকদার আরও বলেন, ‘নির্বাচন যে এত বিশাল কর্মযজ্ঞ, এ বিষয়ে সত্যি আমার ধারণা ছিল না। কারণ নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কাজ করার কোনো সুযোগ কিংবা নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের কাজ করার কোনো সুযোগ আমার আমলা জীবনে কখনো হয়নি। এখানে এসে এই বিশাল কর্মকাণ্ড দেখে বিশাল অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পেরেছি। কী নিরলস প্রচেষ্টায় আপনারা নির্বাচনকে সফল করেছেন, প্রত্যক্ষভাবে না থাকলে এটা আমি দেখতে পারতাম না, বুঝতে পারতাম না। আমি বিশেষ করে লক্ষ করেছি, এই বিশাল কর্মযজ্ঞের যিনি কেন্দ্রবিন্দু, আমাদের নির্বাচন কমিশনের সচিব মহোদয় এবং তাঁর সঙ্গে এখানে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা কী নিরলস প্রচেষ্টার মাধ্যমে এই নির্বাচনকে সফল করেছেন। সে জন্য আমি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাতে চাই মাননীয় প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে। তিনি একজন মুক্তিযোদ্ধা। যোদ্ধার মতোই তিনি এই বিশাল কর্মযজ্ঞে সবাইকে নেতৃত্ব দিয়েছেন।’
অন্য কমিশনারদের সঙ্গে নিজের সম্পর্ককে নিবিড় দাবি করে মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘অন্যান্য নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে আমার প্রতিদিন দেখা হয়, যাঁদের সঙ্গে দুই বছরের কাছাকাছি সময় অতিবাহিত করেছি। আরও তিন বছর অতিবাহিত করতে পারব আশা করি। তাঁদের সঙ্গে আমার যে সম্পর্ক, তা নিবিড়। মাননীয় প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নূরুল হুদার সঙ্গেও আমার একটা অত্যন্ত মধুর সম্পর্ক রয়েছে, যেটার জন্য আমি আনন্দিত এবং গর্বিত। আপনারদের সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন।’
সবশেষে মাহবুব তালুকদার বলেন, ‘আমি একটা জিনিস সবার কাছে প্রত্যাশা করি। আমি মনে করি, আমার মতো বয়স্ক আর কেউ এখানে নেই। আপনাদের সবার দোয়া কামনা করি। আর অন্তরের অন্তস্তল থেকে আপনাদের সবাইকে দোয়া করি।’
সুইডেন-ফিনল্যান্ডের ন্যাটোর সদস্য হতে আবেদন
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্যপদের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করেছে রা…