‘সাম্প্রতিক পরিস্থিতি ও চলমান সংকট’ নির্বাচিত সরকারই সমাধান করতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
চলমান সমস্যার সমাধান করতে পারে নির্বাচিত সরকারই : মির্জা ফখরুল
তিনি বলেছেন, দেশের চার দিকের অবস্থা দেখে অনেকে একটু আতঙ্কিত হচ্ছেন, উদ্বিগ্ন হচ্ছেন যে এগুলো কী হচ্ছে? পতিত স্বৈরাচার পেছন থেকে আবারও দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা করছে। এখানে আমাদের অত্যন্ত সজাগ থাকতে হবে।
মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘তারেক রহমান : পলিটিক্স অ্যান্ড পলিসিস কনটেমপরারি বাংলাদেশ’ শীর্ষক গ্রন্থের প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ৫৭১ পৃষ্ঠার গ্রন্থে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জীবন-কর্ম-রাজনীতির নানা দিক বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেছেন লেখক মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কোমলমতি বালকরা-ছাত্ররা যেসব কাজ করছে, তাদের এখান থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। এটি একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, এই সরকারের পক্ষে সব কিছু একসঙ্গে করে ফেলা সম্ভব নয়। আমাদের ধৈর্য ধরতে হবে। নির্বাচন ছাড়া এ ধরনের সমস্যা (সাম্প্রতিক পরিস্থিতি) সমাধান করা সম্ভব নয়, এ ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা সম্ভব নয়।’
তিনি বলেন, একমাত্র নির্বাচিত সরকারই পারে এসব সমস্যা সমাধান করতে। অন্তত তার পেছনে যে জনশক্তি থাকে, যে ম্যান্ডেট থাকে সেই ম্যান্ডেট নিয়েই সেটা তার (নির্বাচিত সরকার) পক্ষে করা সম্ভব হবে।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আমাদের সহযোগিতা করতে হবে। কারণ এই সরকার ফেল করলে, অভ্যুত্থান ফেল করে যাবে, বিপ্লব ফেল করে যাবে, আমরা আবারও সেই অন্ধকারে চলে যাব। এ বিষয়গুলো নিয়ে আপনাদের পজেটিভ চিন্তা করা প্রয়োজন।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘একটি বিষয় অত্যন্ত জরুরি, দুর্ভাগ্যক্রমে আজকে একটি ভয়াবহ কাজ শুরু হয়েছে। সেটি হচ্ছে সংবাদপত্রের ওপর আঘাত, স্বাধীন মতামত প্রকাশের ক্ষেত্রে আঘাত। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ২০০১ সালে ক্ষমতায় আসার পরে তিনি প্রথম সংবাদপত্রকে মুক্ত করেছিলেন। আজকে যখন দেখছি, কিছু সংখ্যক হঠকারী, কিছু সংখ্যক উসকানিদাতা তারা বিভিন্নভাবে এই সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে বিঘ্নিত করার চেষ্টা করছে, ধ্বংস করার চেষ্টা করছে। যেটা কোনো মতেই সচেতন মানুষের, দেশপ্রেমিক মানুষের মেনে নেওয়া উচিত নয়।
সুদূর প্রবাসে থেকে দলকে সংগঠিত করে এবং দলের ভেতরে গণতন্ত্র চর্চা ব্যবস্থা করার ক্ষেত্রে তারেক রহমানের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন বিএনপি মহাসচিব। এ সময় তিনি তারেক রহমানসহ জিয়াউর রহমানের পরিবারের ওপর আওয়ামী লীগ সরকারের নির্মম নির্যাতনের কথা তুলে ধরেন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারের সভাপতিত্বে ও সহআন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট ফারজানা শারমিন পুতুলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সাংবাদিক শফিক রেহমান, চারুকলা ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক আবদুস সাত্তার, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডি, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক দিল রওশন জিন্নাত আরা নাজনীন, সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার নওশাদ জমির, গবেষক মোবাশ্বর হোসেন, শরীফুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে বিএনপির মির্জা আব্বাস, আবদুল মঈন খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, আলতাফ হোসেন চৌধুরী, আমান উল্লাহ আমান, আবদুল হালিম, ইসমাইল জবিহউল্লাহ, রুহুল কবির রিজভী, আবদুস সালাম আজাদ, ড. মাহাদি আমিন, আনোয়ার হোসেন খোকন, সেলিম রেজা, শামা ওবায়েদ, আফরোজা আব্বাস, বাসস পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান আনোয়ার আলদীনসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, চিকিৎসক, আইনজীবী, প্রকৌশলী, কূটনীতিক ও বিএনপির বিভিন্ন স্তরের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।