‘ভালোবাসা’ স্বল্প দামে বিক্রি করার প্রতিশ্রুতি নিয়ে রাস্তার পাশে দোকান খুলে বসেছেন চীনের কিছুসংখ্যক তরুণী। আগ্রহী তরুণরা এসব তরুণীদের দোকানের পাশে ভীড় জমাচ্ছেন। দরদামে মিলে গেলে কেউ কিনে নিচ্ছেন চুমু, কেউবা কিনে নিচ্ছেন আলিঙ্গন, কেউ কিনে নিচ্ছেন কিছুটা সময়।
ভালোবাসা’ যে দেশে ভ্রাম্যমাণ দোকানে বিক্রি হয় ‘
এসব তরুণীদের ডাকা হয় ‘স্ট্রিট গার্লফ্রেন্ড’ নামে। স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানাচ্ছে, বিয়ের প্রতি অনাগ্রহী তরুণরা স্ট্রিট গার্লফ্রেন্ড-এর প্রতি বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছেন। তারা স্বল্প মূল্যে তরুণীদের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছেন। এ ছাড়া যেসব তরুণ কাজের চাপ মোকাবিলা করতে হিমশিম খান এবং পরিবারের দায়িত্ব নিতে চান না তারা অর্থের বিনিময়ে স্বল্প সময়ের জন্য ভালোবাসা কিনে নেন।
ভ্রাম্যমাণ এসব ভালোবাসার দোকানে কোন পরিষেবা কত টাকায় বিক্রি হবে তার সাইনবোর্ডে লেখা থাকে।রাস্তার পাশে ভালোবাসার দোকান নিয়ে বসে থাকা এসব তরুণীদের ছবি, ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একজন স্ট্রিট গার্লফ্রেন্ডের সাইনবোর্ডে লেখা— একটি আলিঙ্গন ১ ইউয়ান, একটি চুমু ১০ ইউয়ান এবং একসঙ্গে সিনেমা দেখার মূল্য ১৫ ইউয়ান।
এসব সব স্ট্রিট গার্লফ্রেন্ড একই রকমের সেবা প্রদান করেন না। কেউ কেউ ক্রেতার ঘরের কাজেও সহায়তা দেন। পানীয় পান করার সময়ও সঙ্গ মেলে কারও কারও। তবে এর জন্য বাড়তি ইউয়ান খরচ করতে হয়।
একজন স্ট্রিট গার্লফ্রেন্ডের সাইনবোর্ডে লেখা ঘরের কাজে সাহায্যের জন্য ২০ ইউয়ান, পানীয় পান করা সময় সঙ্গ দেওয়ার জন্য ৪০ ইউয়ান লাগবে। বিভিন্ন ধরনের সেবা প্রদানের মাধ্যমে একজন স্ট্রিট গার্লফ্রেন্ড ১০০ ইউয়ান পর্যন্ত আয় করে থাকেন। তবে তাদের এই কার্যক্রম ঘিরে আছে আলোচনা এবং সমালোচনা।
চীনের আইনি প্রতিষ্ঠান সিচুয়ান হংকিয়ের আইনজীবী হি বু সংবাদমাধ্যম দ্য পোস্টকে জানান, স্ট্রিট গার্লফ্রেন্ড পরিষেবাটির এমন অবস্থা যা দেশের আইনি কাঠামোর বাইরে চলে যাচ্ছে এবং পতিতাবৃত্তির ঝুঁকি বাড়ছে।
তিনি বলছেন, তরুণ-তরুণীরা সামাজিক ও মানসিক চাহিদা মেটাতে স্বাভাবিক ও স্বাস্থ্যকর উপায় বেছে নিতে পারেন। এজন্য সমাজের সব স্তরের মানুষ তাদের পথ দেখাতে পারেন।
এসব স্ট্রিট গার্লফ্রেন্ড দৈহিক সম্পর্কে রাজি নন। তবে একদিনের প্রেমিকা হতে রাজি আছেন অনেকে। এর জন্য তারা মূল্য নির্ধারণ করেন ৬০০ ইউয়ান পর্যন্ত। উল্লেখ্য, ১ ইউয়ান বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৬টাকার বেশি মূল্যমানের।
চাইনা মর্নিং পোস্টে এই প্রথার বিরোধীদের মতামত তুলে ধরে বলা হয়েছে, অর্থের বিনিময়ে ভালোবাসা কিনে নেওয়া নারীকে অবমাননা করার সমতুল্য। এই প্রথা নারীর মর্যাদা নষ্ট করছে।