ঢাকা: রাজধানীর রূপনগর এবং পার্শ্ববর্তী শিয়ালবাড়ি আবাসিক এলাকায় কয়েকজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধভাবে চাঁদাবাজি, নির্যাতন এবং মাদক ব্যবসার ভয়াবহ অভিযোগ উঠেছে।
চাঁদাবাজি-মাদকের অভিযোগ, জনমনে আতঙ্ক





স্থানীয় একাধিক সূত্র জানিয়েছে, মোঃ আরাফাত হোসেন বাবু ওরফে 'কসাই বাবু' এবং তার ছোট ভাই মোঃ মির হোসেন মেরু এই সকল কর্মকাণ্ডের নেতৃত্বে রয়েছেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ অনুযায়ী, বড় ভাই মোঃ আরাফাত হোসেন বাবু, পিতা- আব্দুল মজিদ, গরুর মাংস ব্যবসার আড়ালে রূপনগর শিল্প এলাকা এবং পার্শ্ববর্তী শিয়ালবাড়ি আবাসিক এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে ব্যাপক চাঁদাবাজি চালিয়ে আসছেন। চাঁদা দিতে অস্বীকার করলে ভুক্তভোগীদের রূপালী হাউজিং-এর তিন নম্বর রোডে অবস্থিত বিসিআইসি কলোনির ভেতরে নিয়ে গিয়ে মারধর ও নির্যাতন করা হতো বলে জানা যায়। সম্প্রতি জেল থেকে মুক্তি পেয়ে তিনি পুনরায় এলাকায় চাঁদাবাজি শুরু করেছেন এবং টাকা আদায়ের জন্য সাধারণ মানুষকে হয়রানি ও মারধর করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
সূত্র মতে, জুলাই মাসের গণ-আন্দোলনের সময় বাবু স্থানীয় এক প্রভাবশালী রাজনীতিবিদের সাথে মিলে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ছাত্রদের উপর হামলায় অংশ নেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত হন। ছাত্র হত্যা মামলায় তিনি প্রায় দেড় মাস কারাগারে থাকার পর সম্প্রতি জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। এলাকাবাসীর ভাষ্যমতে, তার মামা মোঃ মান্নানও তাকে এসবে মদদ জোগান।
তাদের বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসারও গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। বাবুর ছোট ভাই মোঃ মির হোসেন মেরু ও তার স্ত্রী মোছাঃ আখি আক্তার যৌথভাবে রূপালী হাউজিং ও শিয়ালবাড়ি আবাসিক এলাকায় মাদকের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন বলে জানা গেছে। অভিযোগ রয়েছে, তারা রূপালী হাউজিং এলাকার টিনশেড ঘরগুলোতে নতুন আসা ভাড়াটিয়াদের ১২-১৩ বছরের সন্তানদের মাদক বিক্রিতে বাধ্য করেন। মেরুর নামে রূপনগর ও শাহ আলীসহ বিভিন্ন থানায় একাধিক মাদক ও ছিনতাইয়ের মামলা রয়েছে বলেও জানা যায়।
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া একটি অমানবিক ঘটনায়, ৫৫ বছর বয়সী এক টং দোকানদার মোঃ রাজু গভীর রাতে নিজ দোকানে ঘুমন্ত অবস্থায় ছিলেন। চাঁদা না দেওয়ার কারণে মেরু, তার স্ত্রী এবং তাদের সহযোগীরা রাজুকে দোকান থেকে বের করে এনে বেধড়ক মারধর করে রক্তাক্ত করে। ভুক্তভোগীর অভিযোগ, পরবর্তীতে বড় ভাই বাবুর প্রভাবে উল্টো তাকেই পুলিশ আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এই ব্যক্তিদের ক্রমাগত হুমকিতে এলাকার সাধারণ মানুষ এবং ব্যবসায়ীরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন এবং তারা প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।