আজ রাষ্ট্রপক্ষের বক্তব্য উপস্থাপন করছেন অ্যাটর্নি জেনারেল
তত্ত্বাবধায়ক সরকার পুনর্বহালের আপিল শুনানি নবম দিনে
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য দায়ের করা চূড়ান্ত আপিল আবেদনের ওপর আজ নবম দিনের মতো শুনানি চলছে।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বে গঠিত আপিল বেঞ্চে এই আইনি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আদালতে আজ রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে শুনানি করছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।
এর আগে গত ২১, ২২, ২৩, ২৮, ২৯ অক্টোবর এবং ২, ৪ ও ৫ নভেম্বর এই আবেদনের ওপর টানা আট দিন শুনানি সম্পন্ন হয়েছে। এই আট দিনে ড. বদিউল আলম মজুমদারসহ মোট পাঁচ আবেদনকারীর পক্ষে অ্যাডভোকেট ড. শরীফ ভূঁইয়া তাঁর বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন। এছাড়া ইন্টারভেনার হিসেবে অ্যাডভোকেট এহসান এ সিদ্দিক, জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে অ্যাডভোকেট শিশির মনির, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোফাজ্জল হোসেনের পক্ষে অ্যাডভোকেট এস এম শাহরিয়ার এবং বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের পক্ষে সিনিয়র আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও রুহুল কুদ্দুস তাদের শুনানি শেষ করেছেন।
প্রেক্ষাপট: ত্রয়োদশ সংশোধনী থেকে পঞ্চদশ
তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা আবেদনের শুনানির পর গত ২৭ আগস্ট আপিলের অনুমতি দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৯৬ সালে সংবিধানে ত্রয়োদশ সংশোধনী অন্তর্ভুক্ত করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয়েছিল। এই সংশোধনীর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট হাইকোর্টের বিশেষ বেঞ্চ সেই রিট খারিজ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করেন।
এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের ধারাবাহিকতায়, ২০০৫ সালে রিট আবেদনকারী পক্ষ আপিল করে। সেই আপিলের প্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করেন।
ওই রায় ঘোষণার পর তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থার বিলোপসহ বিভিন্ন বিষয়ে পঞ্চদশ সংশোধনী আইনটি ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পাস হয় এবং ২০১১ সালের ৩ জুলাই তা গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়।
তবে সরকার পরিবর্তনের পর এই রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন বিশিষ্ট ব্যক্তি আবেদন করেন। অন্য আবেদনকারীরা হলেন তোফায়েল আহমেদ, এম হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভূঁইয়া এবং জাহরা রহমান। পরবর্তীতে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ারও রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে পৃথক আবেদন করেন। এছাড়া নওগাঁর বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেনও আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে গত বছর একটি আবেদন দায়ের করেন।
এই সবগুলো আবেদনের সম্মিলিত শুনানিই চলছে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চে।