আগামী পাঁচ বছরের জন্য তুরস্কে সরকার ও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লক্ষ্যে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে দেশটিতে। দুই দশকের শাসনামলে এবারই সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান। তুরস্কের স্থানীয় সময় সকাল আটটা থেকে শুরু হয়ে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। তুরস্কের ‘লৌহমানব’ খ্যাত শক্তিশালী নেতা এরদোগান টানা ২০ বছর ধরে দেশটির ক্ষমতায় রয়েছেন। তবে তুর্কী প্রেসিডেন্টের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন বিরোধী জোটের প্রার্থী কেমাল কুলুচদারুলু। ছয়টি বিরোধী দল নিয়ে গঠিত জোট ‘টেবিল এবং সিক্সের’ প্রতিনিধিত্ব করছেন তিনি। এছাড়া তাঁর দলকে সমর্থন জানিয়েছে আরও কিছু সরকারবিরোধী দল। এবারের নির্বাচনে ভোটারদের মধ্যে আট শতাংশই ‘ফার্স্ট-টাইম ভোটার’ অর্থাৎ যারা প্রথমবারের মতো ভোট দিচ্ছেন। তাই নির্বাচনের ফলাফল অনেকটাই এই তরুণ প্রজন্মের হাতে যারা এখনো স্থির নয় কাকে ভোট দেবে, বলছেন বিশ্লেষকরা। এ ছাড়া তুরস্কের ভোটারদের ৫০.৭ শতাংশ নারী কিন্তু সংসদে এখনো তাদের প্রতিনিধিত্ব কম। তাই এবারের নির্বাচনের ফলাফল অনেকটা নারীদের উপরও রয়েছে বলা চলে। এবারের নির্বাচনে অর্থনীতি, মূল্যস্ফীতি, বন্যা, ভূমিকম্প, আবাসন, শরণার্থী এসব বিষয় মূল প্রতিপাদ্য হয়ে উঠেছে। লাগামহীন মূল্যস্ফীতির কারণে ক্রমশই কঠিন হয়ে পড়ছে জনজীবন। সরকারি হিসেবে বর্তমানে মূল্যস্ফীতির এই হার দাঁড়িয়েছে ৪৪ শতাংশ। দেশটির নাজুক এই অর্থনৈতিক পরিস্থিতির জন্য ব্যাপকভাবে দায়ী করা হয় প্রেসিডেন্টের এরদোগানের গৃহীত নীতিমালাকে।
তুরস্ক নির্বাচন বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি এরদোগান : চলছে ভোটগ্রহণ,





সাম্প্রতিক জনমত জরিপে দেখা গেছে তরুণ ভোটারদের কাছে এই দুজন প্রার্থীরই আবেদন রয়েছে। এ কারণে প্রধান বিরোধী জোটের সমর্থকরা আশঙ্কা করছেন কুলুচদারুলুর ভোট ভাগ হয়ে গেলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দ্বিতীয় দফার ভোটাভুটিতে গড়াতে পারে।
আজকের ভোটে কেউ যদি অর্ধেকের বেশি ভোট পান তাহলে তিনিই সরাসরি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। আর কোনো প্রার্থী ভোটারদের ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পেলে দুই সপ্তাহ পর দ্বিতীয় রাউন্ডের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচনে ভোটাররা প্রেসিডেন্টের পাশাপাশি আগামী পাঁচ বছরের জন্য সংসদের ৬০০ সদস্য ভোটের মাধ্যমে নির্বাচন করবেন।
তবে এই নির্বাচনকে ঘিরে বেশ কড়াকড়ি আরোপ করেছে তুর্কি সরকার। সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত নির্বাচন সম্পর্কে কোন পূর্বাভাস বা মন্তব্য করতে পারবেন না সংশ্লিষ্ট কেউ। এমনকি রাত নয়টার আগ পর্যন্ত গণমাধ্যমেও কোন তথ্য না দেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। রাত নয়টা থেকে শুরু হবে ফলাফল প্রকাশ।
আল জাজিরা জানায়, তুরস্কে এবার ৬ কোটির ও বেশি মানুষ ভোট দিবে। আর অন্যান্য দেশে বসবাসকারী প্রায় ১৮ লাখ তুর্কি নাগরিক ইতিমধ্যে ৭৩টি দেশে বা সীমান্ত গেটে তাদের ভোট দিয়েছেন।