ঈদ সবার জীবনে আনন্দ আসুক

Total Views : 13
Zoom In Zoom Out Read Later Print

বছর ঘুরে ফিরে এসেছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। ঈদ মানে আনন্দ। সবার মাঝে নিজেকে বিলিয়ে দেওয়ার মধ্যে রয়েছে অপার আনন্দ। ঈদের আগের এক মাস সিয়াম সাধনার মাধ্যমে আত্মাকে পরিশুদ্ধ করা হয়। অপরের দুঃখ-কষ্ট বোঝার চেষ্টা করা হয়। ঈদের দিন ধনী-গরিব নির্বিশেষে সবাই এক কাতারে শামিল হয়ে মহান আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন।

আমাদের সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে অনেক সমস্যা আছে, আছে অনেক জটিলতা। তা সত্ত্বেও বিভিন্ন জাতীয় উৎসবে শ্রেণি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব মানুষ শরিক হন। যার যার সামর্থ্য অনুযায়ী প্রিয়জনকে নতুন পোশাক ও উপহারসামগ্রী কিনে দেন। যারা সারা বছর জীর্ণ পোশাকে থাকেন, তারাও ঈদের দিন সন্তানদের নতুন পোশাক পরাতে চান। কারণ ঈদের আনন্দ কেবল একা ভোগ করার নয়, গরিব-দুঃখী মানুষকে তাতে শামিল করতে হয়। এটিও ইসলামের শিক্ষা। নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে যারা বিপাকে পড়েছেন, তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে সামর্থ্যবানদের।

ঈদের নামাজ আদায়ের আগেই ফিতরা দেওয়ার নিয়ম। ফিতরার উদ্দেশ্য দারিদ্র্যের কারণে যাতে কেউ আনন্দ থেকে বঞ্চিত না হয়, তার নিশ্চয়তা বিধান করা। সচ্ছলরা সঠিক নিয়মে জাকাত-ফিতরা দান করলে দরিদ্ররাও ঈদের খুশির ভাগ পেতে পারেন। অনেকে গরিব-দুঃখীদের সাহায্য না করে ব্যক্তিগত ভোগ-বিলাসে ব্যস্ত থাকেন। এটি যে ইসলামি বিধানের পরিপন্থি, ঈদ উদযাপনের সময় আমাদের এ কথাটিও মনে রাখতে হবে। ঈদ আসে সাম্যের বার্তা নিয়ে। অনেকে ধর্মের আনুষ্ঠানিকতাকে বড় করে দেখেন। এর মর্ম অনুধাবন করেন না। ইসলাম শান্তি, সম্প্রীতি ও ভ্রাতৃত্ববোধের ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়। দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের রাজনৈতিক ও সামাজিক জীবনে আনন্দ ও সম্প্রীতির বড় অভাব। তা সত্ত্বেও ঈদুল ফিতরের আনন্দ সবাই ভাগাভাগি করে নেবেন, এটাই প্রত্যাশা।

প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করতে বিপুলসংখ্যক মানুষ বাড়ি গেছেন এবারও। তবে বিগত বছরগুলোর মতো এবার ঈদযাত্রায় ভোগান্তি ছিল না। ঈদযাত্রা ছিল স্বস্তিদায়ক। সড়ক-মহাসড়কে গাড়ির চাপ থাকলেও অসহনীয় যানজট ছিল না। ঘণ্টার পর ঘণ্টা আটকে থাকার ভোগান্তিতে পড়েননি ঘরমুখো যাত্রীরা। ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ছিল না। প্রায় সব ট্রেনই নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে গেছে। নৌপথের ঈদযাত্রাতেও কোনো ভোগান্তি ছিল না। সব মিলিয়ে ঈদযাত্রা স্বস্তিদায়ক হওয়ার জন্য প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্তদের সাধুবাদ জানাতে হয়।

ঈদের ছুটিতে রাজধানী ফাঁকা হয়ে যাওয়ায় নগরবাসীর নিরাপত্তার বিষয়ে বিশেষভাবে নজর দেওয়া প্রয়োজন। নিরাপদ পরিবেশে ঈদ উদযাপনের জন্য এবং ঈদে বাসাবাড়ি, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণিবিতানের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কিছু নির্দেশনা জারি করেছে। তারা বাসাবাড়ি এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও বিপণিবিতানে পাহারা জোরদার ও সার্বক্ষণিক নজরদারির ওপর জোর দিয়েছে। এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি নাগরিকদেরও সতর্ক থাকা প্রয়োজন বলে মনে করি আমরা। ঈদের ছুটিতে হাসপাতাল, ফায়ার সার্ভিস, পুলিশসহ জরুরি সেবা কার্যক্রম যেন ঢিলেঢালা হয়ে না পড়ে, সরকারকে সে বিষয়েও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। উৎসব-আনন্দে সংশ্লিষ্টরা যেন দায়িত্বের কথা ভুলে না যান। 

See More

Latest Photos