ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ

Total Views : 11
Zoom In Zoom Out Read Later Print

ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সংঘাত আবারো উপমহাদেশে যুদ্ধের ছায়া ফেলেছে। কয়েক দিনের যুদ্ধাবস্থায় দুই দেশই সামরিক, কৌশলগত এবং মানবিক ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়েছে।


১০ মে থেকে যদিও মার্কিন মধ্যস্থতায় নাটকীয় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও সংঘাতের ফলাফল বিশ্লেষণে বোঝা যায় ক্ষতি উভয় পক্ষেই ভয়াবহ। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া, এনডিটিভি, এএনআই ও ডন, জিও নিউজের।

যুদ্ধের প্রেক্ষাপট ও দিনক্ষণ:

২২ এপ্রিল ভারতের জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ  সন্ত্রাসী হামলার পর থেকেই ভারত-পাকিস্তানের উত্তেজনা শুরু। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ি করে। অন্যদিকে অস্বীকার করে পাকিস্তান। তবে পাকিস্তানের সংশ্লিষ্টতা নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো প্রমাণ দিতে পারেনি ভারতের মোদি সরকার। 

এরপর পহেলগাঁওয়ে হামলার প্রতিশোধ হিসাবে পালটা ব্যবস্থা গ্রহণ করে ভারত। প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানও বিভিন্ন পদক্ষেপ ঘোষণা করে। উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে ০৭ মে মধ্যরাতে ‘অপারেশন সিঁদুর’র অভিযানে পাকিস্তানের ৬ শহরের ৯ টার্গেটের ২১ স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় ভারত।

পালটা প্রতিশোধে ১০ মে ভোররাতে ‘বুনইয়ানুন মারসুস’ নামে ভারতের সামরিক স্থাপনায় সমন্বিত ও পরিকল্পিত হামলা চালায় পাকিস্তান। এছাড়া আগের দুই দিন রাতে পাকিস্তান থেকে অন্তত ৪০০ সামরিক ড্রোন ভারতে প্রবেশ করেছে বলে দাবি করে ভারতের সামরিক বাহিনী। এসব ড্রোনের অনেকগুলো ভারতের মাটিতে আঘাত হানার তথ্য জানায় সংবাদমাধ্যমগুলো।

যুদ্ধবিরতি ঘোষণা

১০ মে বিকাল ৫টা থেকে উভয় পক্ষ অস্ত্রবিরতিতে সম্মত হয়, যা যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় সম্ভব হয়। তবে সংঘাতের এই কয়েক দিনে যে ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে, তা দুই দেশের ইতিহাসে একটি স্মরণীয় অধ্যায় হিসাবে থেকে যাবে বলে মন্তব্য করছেন বিশ্লেষকরা।

পাকিস্তানের ক্ষয়ক্ষতি (দু-পক্ষের দাবি ও সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী)

বেসামরিক প্রাণহানি: ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ৬৫ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন। আহত প্রায় ২০০ জন। 

সামরিক ক্ষয়ক্ষতি : কমপক্ষে ১৮ জন সদস্য নিহত। আহত ৫০ জনের বেশি। 

এছাড়া একটি ড্রোন কন্ট্রোল সেন্টার এবং দুইটি কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল হাব ধ্বংস হয়েছে বলে একাধিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়। একাধিক সামরিক সরঞ্জাম সংরক্ষণের গুদাম ও রাডার স্টেশনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়।

কাঠামোগত ও কৌশলগত ক্ষতি: ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় লাহোর ও মুলতানে কিছু সামরিক ঘাঁটির বিমান অবতরণ ব্যবস্থা অচল হয়েছে বলে জানা যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দুইটি জ্বালানি ডিপো, যার ফলে সাময়িক জ্বালানি সংকট দেখা দেয়। 

ইসলামাবাদ, রাওয়ালপিন্ডি, কোয়েটা ও গুজরানওয়ালার মতো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার আবাসিক ভবন, স্কুল ও হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

ভারতের ক্ষয়ক্ষতি (দু-পক্ষের দাবি ও সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী)

সামরিক ক্ষয়ক্ষতি: পাকিস্তানের পালটা হামলায় ভারতের প্রায় ৫০-৭০ জনের বেশি সেনা নিহত। আহত প্রায় ১৫০ জন। 

পাকিস্তানের ক্ষেপণাস্ত্র আঘাত হানা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর মধ্যে রয়েছে শ্রীনগর বিমানঘাঁটি। ২০ জন ভারতীয় সেনা সদস্য নিহত হয় বলে জানা যায়। শ্রীনগর বিমানবন্দর, উধমপুর ও পাঞ্জাবের পাঠানকোট বিমানঘাঁটির একাংশ এবং আদমপুর বিমান ঘাঁটির একটি অত্যাধুনিক এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস। 

পাকিস্তান বিমান বাহিনীর (পিএএফ) জেএফ-১৭ বিমান থেকে উৎক্ষেপণকৃত হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের মাধ্যমে এই হামলা চালানো হয়। পাকিস্তান বলেছে, এই কেন্দ্রটি পাকিস্তানে ‘সন্ত্রাসবাদ পরিচালনার’ জন্য ব্যবহৃত হতো। পাঞ্জাব-হরিয়ানার রাজধানী চন্ডীগড়ের অস্ত্রাগার ক্ষতিগ্রস্ত।

বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি: ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো ৩০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হওয়ার খবর দিচ্ছে (নিশ্চিত নয়)।  জম্মু, পাঞ্জাব এবং রাজস্থানের সীমান্তবর্তী এলাকায় গৃহহীন হয়েছে শত শত পরিবার।

কৌশলগত ক্ষতি: ভারতের একাধিক বিমানঘাঁটির তেল ডিপো ধ্বংস হওয়ায় তাৎক্ষণিক প্রতিরক্ষা প্রস্তুতিতে প্রভাব পড়ে বলে জানায় পাকিস্তান। কাশ্মীরের রাজৌরি জেলার নওশেরার গুরুত্বপূর্ণ ‘মিলিটার ইন্টেলিজেন্স কেন্দ্র’ ধ্বংস হয়েছে। দাবি করেছে পাকিস্তান, অস্বীকার করেছে ভারত। 

সীমান্তবর্তী পোস্টে হামলা : ফুকলিয়ান সেক্টর সংলগ্ন ভারতীয় পোস্ট এবং এলওসি ঘেঁষা  গুরুত্বপূর্ণ চৌকি রাব তানওয়ালি, জাজিরা কমপ্লেক্স, কাফির মেহরি, শাহপার ৩ ও গদর টপ-পোস্টে হামলা।

See More

Latest Photos