৫ আগস্ট হাসিনার ১ হাজার কলরেকর্ড মুছে ফেলা হয়, নেপথ্যে কে

Total Views : 10
Zoom In Zoom Out Read Later Print

জুলাই আন্দোলন দমাতে নিজ দলের নেতাকর্মী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনকে হাজারো নির্দেশনা দেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

৫ আগস্ট তিনি যখন দেশ ছেড়ে পালিয়ে দিল্লিতে অবস্থান করছেন, ঠিক সেই সময়ে ঢাকায় তার সেইসব কল রেকর্ড মুছে ফেলার কাজে ব্যস্ত ছিলেন টেলিযোগাযোগ নজরদারির জাতীয় সংস্থা ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) তদানীন্তন মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান। লোক পাঠিয়ে সেদিন সন্ধায় এনটিএমসির সার্ভার থেকে মুছে দেওয়া হয় শেখ হাসিনার ৪টি ফোন নম্বরের মালিকানার তথ্যসহ অন্তত ১ হাজার কলরেকর্ড। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। 

সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা ও প্রসিকিউটর তানভীর হাসান জোহা এ বিষয়ে যুগান্তরকে বলেন, শেখ হাসিনার ফোন থেকে কলডেটা মুছে ফেলার ঘটনাটি নজিবিহিন। এই সংখ্যা আমি সরাসরি উল্লেখ করছি না। তবে ঘটনাটি ঘটেছে এনটিএমসিতে। আন্দোলনের সময় ইন্টারনেট কেন বন্ধ করা হয়েছিল, সে বিষয়টি তদন্ত করতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাই। আমরা ডেটা মুছায় এনটিএমসির ইনভলভমেন্ট পাই। আমরা তথ্য পেয়েছি, জিয়াউল আহসানের নির্দেশে এনটিএমসির চুক্তিভিত্তিক কিছু কর্মকর্তা ডিজিটাল আলামত মুছে ফেলেন।

তিনি জানান, গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা যখন ভারতের দিল্লিতে আশ্রয় নেন, সে সময় তার কলরেকর্ড মুছে ফেলার কাজটি করে এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক জিয়াউল আহসান। এই নম্বরগুলোর মুছে ফেলা ডিজিটাল এভিডেন্স উদ্ধারে কাজ চলছে।

তানভীর হাসান জোহা বলেন, ৫ আগস্ট সন্ধ্যায় এনটিএমসির সার্ভার থেকে মুছে দেওয়া কলরেকর্ড উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। এ সময় সাবেক আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন এবং সাবেক এক পরিকল্পনা মন্ত্রীর কল রেকর্ডও মুছে ফেলা হয় বলে উল্লেখ করেন তিনি।

জুলাই আন্দোলনের সময় শেখ হাসিনার কিছু ফোনালাপ উদ্ধার করেন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা। যেখানে মারণাস্ত্র ব্যবহার, হেলিকপ্টার থেকে গুলিসহ নানা নির্দেশনা দিতে শোনা যায় শেখ হাসিনাকে। জুলাই আন্দোলন দমন ও হতাহতের তথ্য গোপন করতে, যখন তখন বন্ধ করে দেয়া হতো ইন্টারনেট। কে জানতো এই ইন্টারনেট সেবা বন্ধই কাল হয়ে উঠবে শেখ হাসিনার জন্য। কারণ বাধ্য হয়ে তখন অনেকের সঙ্গেই ফোনে কথা বলতে হয়েছিলো শেখ হাসিনাকে।
প্রসঙ্গত, জিয়াউল আহসান সর্বশেষ এনটিএমসির মহাপরিচালক ছিলেন। গত ১৫ বছর আলোচিত ও প্রভাবশালী এই কর্মকর্তাকে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পরদিন চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
শেখ হাসিনা সরকারের আমলে গুম ও খুনের ঘটনায় জিয়াউল আহসানকে অন্যতম কুশীলব দাবি করে তিনিসহ জড়িত সবাইকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়ে আসছে গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্বজনদের সংগঠন ‘মায়ের ডাক’। গ্রেফতার হয়ে তিনি বর্তমানে জেলে আছেন। তার বিরুদ্ধে জুলাই গণহত্যা মামলার বিচার শুনানি চলছে।

See More

Latest Photos