স্বর্ণপদক জিতল মালয়েশিয়ায় চুয়াডাঙ্গার জিহাদের রোবট

Total Views : 51
Zoom In Zoom Out Read Later Print

উন্নত প্রযুক্তির রোবট আবিষ্কার করে সাড়া ফেলেছেন চুয়াডাঙ্গার ছেলে জাহিদ হাসান জিহাদ। তার উদ্ভাবন দেশে ছেড়ে এবার আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে স্বর্ণপদক জয় করেছে। মানবজীবনের ঝুঁকিপূর্ণ একাধিক কাজে সহায়তা করতে সক্ষম এই রোবটটি। তার উদ্ভাবিত ‘হেক্সাগার্ড রোভার’ নামের রোবটটি মালয়েশিয়ায় আয়োজিত প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক বিজয়ী হয়েছে। বিশেষ ধরনের রোবট উদ্ভাবনে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে নতুন করে পরিচিত করেছেন জিহাদ।

তবে এতে তিনি সরকারি কোনো সহায়তা পাননি। পরিবারের কয়েক লাখ টাকা ব্যয় করে মালয়েশিয়ার ওই প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছিলেন। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে জিহাদ আরও উন্নত কোনো কিছু আবিষ্কার করে বাংলাদেশের পরিচিতি উচ্চতায় নিয়ে যেতে চান।

চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার পরানপুর গ্রামের জয়নাল আবেদীন ও নাসিমা খাতুনের ছেলে জাহিদ হাসান জিহাদ দর্শনা সরকারি কলেজের এইচএসসি অধ্যয়নরত। মধ্যবিত্ত ঘরের সন্তান জিহাদ ছেলেবেলা থেকেই আবিষ্কারের নেশায় মত্ত।  


তিনি জানান, গত ২১ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর মালয়েশিয়ার সেগাই (SEGi) বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্দোনেশিয়ান ইয়াং সায়েন্টিস্ট অ্যাসোসিয়েশন (IYSA) আয়োজিত ‘বিশ্ব উদ্ভাবন প্রতিযোগিতা ও প্রদর্শনী’র আয়োজন করা হয়। সেখানে বিশ্বের ১৭ দেশের দুই শতাধিক প্রতিযোগী প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়। বাংলাদেশের হয়ে অংশগ্রহণ করে জিহাদের ‘চুয়াডাঙ্গা সাইন্স অ্যান্ড রোবটিক্স ক্লাব’। পাঁচটি বিভাগের মধ্যে ‘আইটি অ্যান্ড রোবটিক্স’ বিভাগে অংশ নিয়ে জিহাদের ১৫ কেজি ওজনের ‘হেক্সাগার্ড রোভার’ সর্বোচ্চ পুরস্কার স্বর্ণপদক বিজয়ী হয়।

জিহাদ জানান, আমি মালয়েশিয়ায় রোবট নিয়ে অংশগ্রহণ করি। এতে আমার পরিবারের কয়েক লাখ টাকা খরচ হয়েছে। সরকারিভাবে আমি এক টাকাও পাইনি।

জিহাদ যুগান্তরকে জানান, তার উদ্ভাবিত ‘হেক্সাগার্ড রোভার’ নামের এই রোবট ছয়টি ভিন্ন ভিন্ন বিষয়ে মানুষের ঝুঁকিপূর্ণ কাজে অংশ নিতে পারে। এর মধ্যে বোমা শনাক্ত, নিষ্ক্রিয়করণ ও সামরিক নিরাপত্তা, অগ্নিকাণ্ডে উদ্ধার তৎপরতা, বন্যপ্রাণী ও কৃষির নিরাপত্তা, শিল্পকারখানার নিরাপত্তা, চিকিৎসা ও জরুরি সরবরাহ এবং সব ধরনের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা। এতে তিনটি ভিন্ন ধরনের ক্যামেরা, কিছু সেন্সর, ইলেকট্রনিক ডিভাইস, রোবটিক হাতসহ আধুনিক প্রযুক্তির যন্ত্রাংশ ব্যবহার করা হয়েছে। এটি উচ্চ তাপ সহনীয় স্টেইনলেস স্টিলের কাঠামোতে আবদ্ধ হওয়ায় এক হাজার ৩০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাতেও কাজ করতে সক্ষম।

জিহাদের সহযোদ্ধারা বলেন, জিহাদের অর্জন শুধু চুয়াডাঙ্গা নয়, সারাদেশের জন্য গর্বের। তারা চুয়াডাঙ্গা রোবটিক্স ক্লাবের সদস্য হওয়ায় নিজেরাও গর্ববোধ করেন। জিহাদ সামনের দিনগুলোতে আরও বেশি সাফল্য অর্জন করবে। তারা মনে করেন, সরকারি সহযোগিতা ও পৃষ্ঠপোষকতা পেলে জিহাদ উদ্ভাবন করবে নতুন নতুন উন্নত প্রযুক্তি।

এ ব্যাপারে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, ‘জিহাদের উদ্ভাবন আমার ভালো লেগেছে। তার উদ্ভাবনী দক্ষতা ও চিন্তাকে আরও বাড়িয়ে দিতে চাই। এ জন্য চুয়াডাঙ্গা জেলা পরিষদ থেকে আমরা কিছু সহযোগিতার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। শিগগিরই সেই অর্থ জাহিদ পাবে। আমাদের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে। আমরা এ ধরনের ছেলেদেরকে অবশ্যই উৎসাহিত করতে চাই।’

See More

Latest Photos