ম্যাচের তখন ১১৬ মিনিটের খেলা চলছে। বার্সেলোনার ডিফেন্ডার জুলেস কুন্দে ডি-বক্সের বাইরে থেকে নিলেন মাটি কামড়ানো একটা শট। রিয়াল মাদ্রিদ গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া লাফিয়ে পড়েও থামাতে পারলেন না, বল গিয়ে আশ্রয় নিল জালে। সেভিয়ার লা কার্তুজা স্টেডিয়াম ফেটে যাওয়ার অবস্থা তখন বার্সা সমর্থকদের চিৎকারে। কোপা দেল রে ফাইনালে শনিবার (২৬ এপ্রিল) দিবাগত রাতে অতিরিক্ত সময়ে জয়সূচক গোল করে রিয়ালকে ৩-২ গোলে পরাজিত করে বার্সা। ট্রেবল জয়ের নেশায় বিভোর কাতালানরা এই মৌসুমে হানসি ফ্লিকের অধীনে প্রথম শিরোপা জিতল। এটা বর্ধিত ৩২তম স্প্যানিশ কাপ শিরোপা। গতরাতে পেদ্রি বার্সেলোনাকে এগিয়ে দেন কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে সাত মিনিটের মধ্যে কিলিয়ান এমবাপে ও অরেলিয়েন চুয়ামেনির গোল রিয়াল মাদ্রিদকে সমতায় ফেরায়। তবে ৮৪তম মিনিটে ফেরান তোরেস গোল করে ম্যাচকে অতিরিক্ত সময়ে নিয়ে যান, যেখানে কুন্দে জয়সূচক গোলটি করেন। রিয়াল মাদ্রিদের ডিফেন্ডার আন্তোনিও রুডিগার শেষ মুহূর্তে মাঠে কিছু একটা ছুঁড়ে মারার অভিযোগে লাল কার্ড দেখেন।
শেষ হাসি বার্সার পাঁচ গোলের রোমাঞ্চকর ফাইনালে





লা কার্তুজায় বার্সা বলের দখল ধরে রাখে শুরু থেকে। ২৮ মিনিটে পেদ্রি দূর থেকে একটি অসাধারণ শটে বল জালে জড়ান। এই গোলটি শুরু হয় পাউ কুবার্সি থেকে। এরপর পেদ্রি বলটি ইয়ামালের দিকে বাড়ান, যিনি কাট করে পেদ্রিকে দারুণ পজিশনে এনে দেন।রিয়াল মাদ্রিদ এরপর খোলামেলা খেলায় আসে এবং বেঞ্চে থাকা এমবাপেকেও গা গরম করতে দেখা যায়। জুড বেলিংহ্যাম একটি চমৎকার আক্রমণ গোল করলেও অফসাইডের কারণে সেটা বাতিল হয়। ভিনিসিয়াস জুনিয়র পেনাল্টির দাবি জানালেও, তার আগেই অফসাইডে ছিলেন।
বার্সেলোনা দ্বিতীয় গোলের খুব কাছাকাছি চলে যায়, কিন্তু দানি ওলমোর কর্নার পোস্টে লেগে ফিরে আসে এবং কুবার্সি সুযোগ মিস করেন। দ্বিতীয়ার্ধে রদ্রিগোর পরিবর্তে এমবাপে নামেন এবং মাদ্রিদ আক্রমণের ধার বাড়তে থাকে। ম্যাচের ৭০তম মিনিটে এমবাপে একক প্রচেষ্টায় সমতা আনেন। একটি ফ্রিকিক থেকে নিচু শটে পোস্টে লেগে গোল করেন তিনি। এর সাত মিনিট পর আর্দা গুলারের কর্নার থেকে হেডে গোল করে মাদ্রিদকে এগিয়ে দেন চুয়ামেনি।
তবে রিয়ালের শ্রীহীন রক্ষ্ণের সুযোগে বার্সা আবারও ফিরে আসে। ইয়ামাল একটি দারুণ পাস দেন, যা রুডিগার ও কর্তোয়া দুজনকেই বিভ্রান্ত করে এবং তোরেস বল জালে জড়ান। অতিরিক্ত সময়ে যাওয়ার আগে বেশ কিছু বিতর্কিত ঘটনা ঘটে। বার্সেলোনা একটি পেনাল্টির দাবি জানালেও পরে ভিএআর দেখে তা বাতিল করে রাফিনিয়াকে ডাইভ করার অভিযোগে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি।
অতিরিক্ত সময়ে বার্সেলোনা আধিপত্য বিস্তার করে এবং লুকা মদ্রিচের একটি দুর্বল পাস থেকে কুন্দে গোল করেন। শেষ মুহূর্তে রেফারি একটা পেনাল্টি আবেদন নাকচ করে দিলে রুডিগারের লাল কার্ড দেখেন।
ম্যাচপূর্ব রেফারিদের ঘিরে বিতর্ক নিশ্চিত করে যে, এই ম্যাচের প্রভাব এখনই শেষ হচ্ছে না। দুই দল মে মাসে লা লিগায় আবারও মুখোমুখি হবে, যা শিরোপা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।