বাংলাদেশের সাথে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক সুদৃঢ় করতে চায় পাকিস্তান। বাংলাদেশের ৫৪তম জাতীয় ও স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এমন মন্তব্য করেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মোহাম্মাদ আসিফ। দ্য নিউজ জানিয়েছে, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা মুহাম্মদ আসিফ বাংলাদেশের ৫৪তম জাতীয় ও স্বাধীনতা দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। বাংলাদেশ হাইকমিশনার মুহাম্মদ ইকবাল হুসেন খান এবং তার স্ত্রী রওশন নাহিদ আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী পাকিস্তান ও বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে স্নেহের কথা তুলে ধরেন। পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী দুই দেশের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে বলেন, উভয় রাজধানী অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সহযোগিতা আরো জোরদার করার জন্য আন্তরিকভাবে কাজ করছে।
বাংলাদেশের সাথেপাকিস্তান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় করতে চায়





তিনি আরো বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশের সাথে আমাদের সম্পর্ককে মূল্যবান বলে মনে করি। বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের সম্পৃক্ততা আরো গভীর করার জন্য আমরা উন্মুখ হয়ে আছি।’ এ সময় তিনি বাংলাদেশের সরকার ও জনগণকে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে শুভেচ্ছা জানান।
পাক প্রতিরক্ষামন্ত্রী আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির প্রশংসা করেন। পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের কথা তুলে ধরে তিনি উভয় দেশের জনগণের মধ্যে উন্নয়ন সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য সম্পর্ক আরো জোরদার করার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন।
আসিফ পাকিস্তান ও বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ককে দুই ভ্রাতৃপ্রতীম দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠতার একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবেও উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশের হাইকমিশনার মুহাম্মদ ইকবাল হুসেন প্রথম জাতীয় দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করছিলেন। তিনি গত সপ্তাহে ঢাকা থেকে পাকিস্তান ফেরেন। পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব মিসেস আমেনা বালুচের ফলপ্রসূ সফরের সমন্বয়ও করেন তিনি। আমেনা বালুচ ১৫ বছর পর পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে পরামর্শের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি বিপুল সংখ্যক বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে স্পষ্টতই খুশি।
বাংলাদেশের হাইকমিশনার ভাষণে পাকিস্তানের সাথে দৃঢ় ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য তার দেশের আকাঙ্ক্ষার উপর জোর দেন। তিনি তার দেশের সৌন্দর্য এবং অতিথিপরায়ণ পরিবেশ তুলে ধরেন। একইসাথে বর্ধিত সহযোগিতা ও পারস্পরিক বোঝাপড়ার প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন।
এছাড়া অনুষ্ঠানে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী, ফেডারেল মন্ত্রী অধ্যাপক আহসান ইকবাল চৌধুরী, ড. তারিক ফজল চৌধুরী, মঈন ওয়াট্টু, হাম কামাল, খেল দাস কোহিস্তানি, মালিক রশিদ আহমেদ, কায়সার আহমেদ শেখ এবং মুহাম্মদ জুনাইদ আনোয়ার উপস্থিত ছিলেন।
হাইকমিশনার পাকিস্তানের সাথে দৃঢ় ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য বাংলাদেশের আকাঙ্ক্ষার উপর জোর দেন, একই সাথে বর্ধিত সহযোগিতা ও পারস্পরিক বোঝাপড়ার প্রয়োজনীয়তার উপর তাগিদ দেন।
অনুষ্ঠানে কূটনৈতিক বাহিনী, সুশীল সমাজ, গণমাধ্যম এবং ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন এবং বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক উপাদানগুলো পরিবেশন করা হয়েছিল। এর মধ্যে বাঙালি রসগোল্লা ও বেকি মাছের মতো ঐতিহ্যবাহী খাবার ছিল, যা এটিকে একটি স্মরণীয় সন্ধ্যা করে তুলেছিল।
মুহাম্মদ ইকবাল হোসেন খান মুক্তিযোদ্ধা এবং ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারীদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। তিনি দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদার করে উভয় দেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেন।
এর আগে দুই দেশের জাতীয় সঙ্গীত বাজানো হয়। এরপর প্রধান অতিথি বাংলাদেশী হাইকমিশনার ও বিশেষ অতিথিদের সাথে একটি কেক কাটেন।
সূত্র : জিও নিউজ