এখন পর্যন্ত ইরানের বন্দরে প্রাণঘাতী বিস্ফোরণে যা গেল

Total Views : 12
Zoom In Zoom Out Read Later Print

শনিবার ইরানের বান্দার আব্বাসের কাছে অবস্থিত শাহিদ রাজাঈ বন্দরে এক বিশাল বিস্ফোরণে অন্তত ২৫ জন নিহত ও ৮০০ জনের বেশি আহত হয়েছে। বিস্ফোরণের ফলে নিকটবর্তী কনটেইনারে আরও ছোট ছোট বিস্ফোরণ এবং অগ্নিকাণ্ড ঘটে, যা রবিবার পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। ইরানের কৌশলগত বন্দর শাহিদ রাজাঈ বন্দর ইরানের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সমুদ্র বন্দর। এটি হরমুজ প্রণালীর উত্তর তীরে অবস্থিত, যেখান দিয়ে বিশ্বব্যাপী এক-পঞ্চমাংশ তেল রপ্তানি হয়। প্রায় ২,৪০০ একর (৯৭০ হেক্টর) এলাকা জুড়ে বিস্তৃত এ বন্দরে বিশাল গুদাম ও সংরক্ষণ সুবিধা রয়েছে। এটি ইরানের বৃহত্তম ও ব্যস্ততম বাণিজ্যিক বন্দর হিসেবে পরিচিত।

এই এলাকা ‘বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল’ হিসেবে ঘোষিত, যা ইরানের আমদানি, রপ্তানি ও পরিবহন কার্যক্রমের কেন্দ্রীয় অংশ হিসেবে কাজ করে।

স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, শাহিদ রাজাঈ বন্দর ইরানের মোট বাণিজ্যের প্রায় ৫০ শতাংশ এবং কনটেইনার পরিবহনের ৮৫-৯০ শতাংশ পরিচালনা করে।

এটি বৃহত্তর বান্দার আব্বাস মহানগর এলাকার অংশ, যার বিস্তৃতি প্রায় ১০০ বর্গকিলোমিটার এবং যেখানে প্রায় ৬ লাখ ৫০ হাজার মানুষের বাস।

শাহিদ রাজাঈ বন্দরের সন্নিকটে রয়েছে ইরানি নৌবাহিনীর প্রধান ঘাঁটি। পাশাপাশি নিকটবর্তী শাহিদ বাহোনার বন্দর মিলে বান্দার আব্বাসের বাণিজ্যিক ও কৌশলগত গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।

বন্দরটিতে সম্প্রসারণ প্রকল্প চলমান রয়েছে, যার মধ্যে শস্য সংরক্ষণের জন্য সাইলো নির্মাণ এবং নতুন মাছ ধরার বন্দর নির্মাণের কাজ চলছে। সম্প্রতি, বন্দরে ৮০,০০০ ঘনমিটার ধারণক্ষমতাসম্পন্ন তেলের ট্যাংক নির্মাণে একটি চুক্তি সই হয়েছে বলে মেহর সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে।

তেল স্থাপনাগুলো স্বাভাবিক

শনিবার মধ্যাহ্নের ঠিক আগে বন্দরের রাসায়নিক ও বিপজ্জনক পদার্থ সংরক্ষণ গুদামে বিস্ফোরণ ঘটে বলে স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, বন্দরের কাস্টমস অফিসের বরাত দিয়ে।

বিস্ফোরণের পর আগুন ছড়িয়ে পড়ে নিকটবর্তী কনটেইনারগুলোতে, এবং একের পর এক ছোট ছোট বিস্ফোরণের ফলে অগ্নিকাণ্ড রবিবার পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।

কর্তৃপক্ষ স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘরে থাকার বা মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছে, বিষাক্ত গ্যাস ছড়ানোর আশঙ্কায়।

রাষ্ট্রায়ত্ত ন্যাশনাল ইরানিয়ান অয়েল প্রোডাক্টস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি জানিয়েছে, এই বিস্ফোরণের সঙ্গে তাদের স্থাপনার কোনো সম্পর্ক নেই। সংস্থাটি স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছে, ‘বন্দর আব্বাসের তেল স্থাপনাগুলো স্বাভাবিকভাবেই চালু রয়েছে।’

বিস্ফোরণের সঠিক কারণ এখনও পরিষ্কার নয়।

পূর্ববর্তী ঘটনা

এর আগে এলাকাটিতে ছোট পরিসরের কিছু দুর্ঘটনা ঘটেছিল।  ২০২৪ সালের মার্চে বান্দার আব্বাসের নিকটবর্তী আফতাব তেল শোধনাগারে মেরামতকাজের সময় অগ্নিকাণ্ডে একজন কর্মী নিহত ও দুজন আহত হয়েছিল।

২০২০ সালের মে মাসে শাহিদ রাজাঈ বন্দরে একটি বড় সাইবার হামলা হয়, যা বন্দরের জাহাজ চলাচল ও সরবরাহ ব্যবস্থাকে অচল করে দেয়। 

ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, ‘ইসরাইলি অপারেটিভরা’ এই হামলা চালিয়েছিল।  যদিও ইরানি কর্মকর্তারা আনুষ্ঠানিকভাবে ইসরাইলের সঙ্গে কোনো সংযোগ নিশ্চিত করেননি।

See More

Latest Photos